রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচং (হবিগঞ্জ) : বানিয়াচং উপজেলা জুড়ে সড়ক গুলোতে অটোরিক্সা,টমটম,মটরসাইকেল থেকে শুরু করে সিএনজিসহ সব যানবাহনে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য লাগানো হয় এক ধরনের সাদা আলোর লাইট, যা এলইডি বা হ্যালোজিন লাইট নামেই পরিচিত। রাতের বেলায় এই সাদা আলোর লাইট জ্বলার কারণে বিপরীত দিক থেকে আসা কোনো যানবাহনের চালক বুঝতে পারে না সামনে আসলে কি আসছে। এতে অনেক সময়ই বড়ো ধরণের দুর্ঘটনা ঘটে।

এই লাইটের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগনের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এই ঝুঁকিপুর্ণ এলইডি লাইট ব্যবহার বন্ধ করতে কর্তৃপক্ষের তেমন কোন অভিযান পরিচালনা না করায় এর ব্যবহার দিনদিন বেড়ে চলেছে বলে জানান স্থানীয়রা।

চিকিৎসদের মতে, এই এলইডি লাইটের আলো রাতের বেলা সরাসরি চোখে পড়লে চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পাওে,এমনকি ধীরে ধীরে সেই চোখ চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রকট। সদরের অটোরিক্সা চালক জামাল হোসেন বলেন,অটোরিক্সার আসল হেডলাইট ব্যবহার হলে (চার্জ) খরচ বেশি হয়, হেডলাইটের বাল্ব নষ্ট হলে এলইডি (ঝাঁপসা) হেডলাইট ব্যবহার করা হয়,ফলে খরচে বেশি লাভ করা যায়। এলইডি লাইট রাতে ব্যবহারে সামনে কোনো যানবাহন আসলে শুধু ঝাপসা দেখা যায়, তখন দুর্ঘটনা এড়াতে ধীরে গাড়ি চালানো হয়।

মোটরসাইকেল চালক লিমন আহসান মোটরসাইকেল চালানোর দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা থাকা সত্ত্বেও তিনি এখন রাতের বেলায় রাস্তায় মোটরসাইকেল চালাতে ভয় পান। তিনি জানান- তখনকার সময়ে ডিজিটাল ছিলনা তবে আইন আর মানুষের মধ্যে সচেতনতা ছিল। প্রতিটি গাড়ির হেডলাইটের উপরের অংশে ছিল কালো রং করা। যাতে করে কারও চোখে লাইটের আলোকরশ্মি না পড়ে। এবং যারা গাড়ি চালান তাদের গাড়ি চালাতে কষ্ট না হয়। এতে করে দুর্ঘটনা ও কম হতো। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল যুগে এসে নানা প্রকার লাইটের আলো চোখে এসে এমনভাবে এসে পড়ে যে সামনে কি আসছে কিছুই দেখা/বোঝা যায়না।

আরেক চালক চাকুরীজীবি শেখ আতাউর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান-সন্ধ্যার পর এই লাইটের কারণে আমরা মোটরসাইকেলের স্ট্যার্ট বন্ধ করে বসে থাকতে হয়। খুব সমস্যা হয় এই এলইডি লাইটের কারণে। শুধু চালক লিমন আহসান ও আতাউর ই নন বর্তমানে যে কোনো সাধারণ ব্যক্তি রাতে বেলায় গাড়ি নিয়ে বের হলেই এলইডি হেডলাইটের যন্ত্রনায় পড়বে। উপজেলা জুড়ে দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে নানান ধরণের যানবাহনের সংখ্যা আর সেই সাথে বেড়ে চলেছে এলইডি লাইটের ব্যবহার। যানবাহনের সাথে লাগানো এলইডি লাইটের আলো চলাচলের সময় ব্যাপকভাবে চোখে পড়ায় সাধারণ মানুষের পথ চলতে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্য লাইট ব্যবহারকারী যানবাহনের চালকরা এই এলইডি লাইটের আলোর কারণে চলন্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকেন ,কারণ একটু বেপরোয়া হলেই ঘটবে দুর্ঘটনা।

পথচারী সামসুদ্দিন রানা বলেন-অপর প্রান্ত থেকে আসা গাড়ির ড্রাইভার বা মানুষ চলাচলের সময় চোখে আলো পড়লে কিছুই দেখা যায়না। যার কারণে প্রতিনিয়তই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুর্ঘটনা এড়াতে তীব্র ঝাপসা এই এলইডি লাইটের ব্যবহার অবিলম্বে বন্ধ করা এবং এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহন করার জন্য কর্তৃপকক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সাধারণ মানুষ।

এ নিয়ে কথা হয় বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন খন্দকারের সাথে। তিনি জানান- বিষয়টি খুবই গুরুত্বপুর্ণ। খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।